ভাবসম্প্রসারণ: শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে
ভাবসম্প্রসারণ: শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে
মূলভাব:
যে ব্যক্তি স্নেহ ও ভালোবাসার মাধ্যমে অপরের মন জয় করতে পারে এবং প্রয়োজনে তাদের ভুল শুধরানোর জন্য কঠোর হতে পারে, প্রকৃত শাসন করার অধিকার তারই রয়েছে। কঠোর শাসন এবং স্নেহের মধ্যকার ভারসাম্যই শাসনকে কার্যকর করে তোলে। শাসনের মাঝে যদি কেবল কঠোরতা থাকে, তবে তা বিদ্রোহ ডেকে আনে। অন্যদিকে, সোহাগই যদি মাত্রাতিরিক্ত হয়, তবে তা শৃঙ্খলার অভাব ঘটায়।
সম্প্রসারিত ভাব:
"শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে" - এই প্রবাদটি আমাদের জীবনের নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একজন অভিভাবক, শিক্ষক কিংবা নেতা তখনই প্রকৃতভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হন, যখন তিনি স্নেহ ও কঠোরতার মধ্যে সঠিক সামঞ্জস্য বজায় রাখেন। যে ব্যক্তি কেবল কঠোর শাসনের মাধ্যমে অন্যের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তিনি বেশিরভাগ সময়েই ব্যর্থ হন। মানুষ শাসনকে মেনে নিতে পারে, যদি তার সাথে স্নেহের মিশ্রণ থাকে।
যেমন একজন শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদের প্রতি কেবল শাসনমূলক আচরণ করেন, তবে শিক্ষার্থীরা তাকে ভয় পেতে শুরু করবে। এতে শিক্ষা অর্জনের প্রতি তাদের আগ্রহ নষ্ট হতে পারে। আবার যদি তিনি শুধুমাত্র সোহাগ করেন, তবে শিক্ষার্থীরা শৃঙ্খলাবোধ হারিয়ে ফেলবে। এজন্য একজন আদর্শ শিক্ষকের ক্ষেত্রে স্নেহ ও শাসনের সমন্বয় অপরিহার্য। তেমনি একটি পরিবারের অভিভাবকের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। সন্তানদের ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য তাদের ভুল শুধরে দেওয়া প্রয়োজন। তবে সেই ভুল শুধরে দেওয়ার সময় স্নেহের মাধ্যমে তা করতে হবে। কারণ, স্নেহমিশ্রিত শাসন মানুষকে অভ্যন্তরীণভাবে সংশোধিত হতে অনুপ্রাণিত করে।
মন্তব্য:
শাসনের সঙ্গে সোহাগের মিশ্রণ মানবসম্পর্ককে মধুর করে তোলে এবং মানুষকে উন্নতির পথে নিয়ে যায়। কেবল শাসন মানুষকে বিদ্রোহী করে তোলে এবং কেবল সোহাগ মানুষকে দায়িত্বজ্ঞানহীন করে। তাই পরিবার, সমাজ কিংবা কর্মক্ষেত্র সব জায়গায় শাসন ও সোহাগের ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে, শাসন করার অধিকার তারই রয়েছে, যিনি অন্যদের স্নেহের মাধ্যমে জয় করতে পারেন।
0 Response to "ভাবসম্প্রসারণ: শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে"
Post a Comment
Hi Dear Visitor! ✨
We’d love to hear your thoughts!
Feel free to leave a comment below. 💬