সমুদ্রের পানি নোনা কেন?
সমুদ্রের পানি নোনা কেন?
সমুদ্রের পানি যে নোনতা, তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু কেন সমুদ্রের পানি এত নোনতা, সেই প্রশ্নটা অনেকেই করে থাকেন। এটি শুধুমাত্র স্বাদের বিষয় নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে ভূগোল, রাসায়নিক বিক্রিয়া ও প্রকৃতির একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
নোনা হওয়ার মূল কারণ:
- বৃষ্টির পানি ও খনিজ: বৃষ্টির পানি পাহাড়, মাটি বা পাথরের উপর পড়লে সেটি খনিজ পদার্থ যেমন সোডিয়াম, ক্লোরাইড, সালফেট ও ম্যাগনেশিয়াম ভেঙে নিয়ে যায়। এই খনিজসমূহ নদী ও ঝর্ণার মাধ্যমে সমুদ্রে গিয়ে জমা হয়।
- নদী থেকে আসা লবণ: পৃথিবীর সমস্ত নদী পাহাড় ও মাটির মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়ে বিপুল পরিমাণ খনিজ ও লবণ নিয়ে সমুদ্রে মিশে যায়। বছরের পর বছর ধরে এই লবণ জমে সমুদ্রের পানি নোনতা হয়ে ওঠে।
- বাষ্পীভবন: সূর্যের তাপে সমুদ্রের পানি বাষ্প হয়ে যায়, কিন্তু লবণ রয়ে যায় পানিতে। ফলে ধীরে ধীরে পানির লবণাক্ততা বাড়তে থাকে।
সমুদ্রের পানিতে কোন লবণ থাকে?
- প্রধানত সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl), যা সাধারণ টেবিল লবণের মতো।
- এছাড়াও সালফেট, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম বিদ্যমান থাকে।
সমুদ্রের পানির গড় লবণাক্ততা:
- প্রতি লিটার সমুদ্রের পানিতে গড়ে প্রায় ৩৫ গ্রাম লবণ থাকে (৩.৫% লবণাক্ততা)।
- মৃত সাগরের মতো কিছু এলাকায় লবণাক্ততা ৩০% এর বেশি হতে পারে।
নদী ও হ্রদের পানি নোনতা নয় কেন?
- নদী ও হ্রদের পানি চলমান থাকে এবং বাষ্পীভবনের হার কম, ফলে লবণ জমে না।
- এই পানিগুলো সমুদ্রে যাওয়ার আগে লবণ পাতলা হয়ে যায় বা জমা হওয়ার সুযোগ পায় না।
উপসংহার:
Also read:
সমুদ্রের পানি নোনা হওয়ার পেছনে রয়েছে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চলা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এটি পৃথিবীর জলের একটি স্বাভাবিক ও বৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্য, যা আমাদের আশ্চর্য করে তোলে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
0 Response to "সমুদ্রের পানি নোনা কেন?"
Post a Comment
Hi Dear Visitor! ✨
We’d love to hear your thoughts!
Feel free to leave a comment below. 💬